মিছরির উপকারিতা ও অপকারিতা



মিষ্টি স্বাদের মিছরি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর স্বাদ অনেকটা চিনির মতো হলেও এটি ক্ষতিকর নয়। নানা রোগের চিকিৎসায় ওষুধ হিসেবে মিছরি ব্যবহার করা হয়। এর আছে অনেক গুণ। নিয়মিত মিছরি কিংবা মিছরি ভেজানো পানি খেলে সুস্থ থাকার প্রক্রিয়া সহজ হয়। এটি সহজলভ্য বলে প্রতিদিন খেতে পারবেন। 

মিছরি মূলত চিনির অপরিশোধিত রূপ। আখ এবং খেজুরের রস থেকে এটি তৈরি করা হয়। এর শুরুটা হয়েছিল ভারতে, এখন বিভিন্ন দেশে মিছরি তৈরি ও ব্যবহৃত হয়। এতে চিনির তুলনায় মিষ্টি থাকে কম। আবার খেতেও সুস্বাদু। মিছরিকে ইংরেজিতে বলা হয় রক সুগার। মিছরি বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে। মিছরি দেখতে সাধারণত সাদা হয়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন রং ব্যবহার করেও একে আকর্ষণীয় করা হয়। জেনে নিন মিছরির উপকারিতা-


ওজন কমায়

ওজন বৃদ্ধি নিয়ে মুশকিলে পড়েন অনেকেই। বর্তমান সময়ে এটি পরিচিত সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তবে তা সহজ হবে যদি নিয়মিত চিনির বদলে মিছরি খেতে পারেন। মিছরি ও মৌরি গুঁড়া করে তা একসঙ্গে রেখে দেবেন এবং নিয়মিত খাবেন, এতে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। যেসব রান্নায় চিনি ব্যবহার করতেন সেগুলোতে চিনির বদলে মিছরি ব্যবহার শুরু করুন। কারণ মিছরিতে উপকারিতা অনেক বেশি।

হজমে সাহায্য করে

হজম ভালো থাকলে মুক্ত থাকা যায় নানা ধরনের অসুখ থেকে। আর আপনার হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে কাজ করবে মিছরি। মৌরি দিয়ে মিছরি খেলে তা হজম ব্যবস্থাকে উন্নত করে। মিছরিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান হজমে সাহায্য করে। তাই হজমশক্তি ভালো রাখতে দুপুর ও রাতের খাবারের পর মিছরির সঙ্গে মৌরি মিশিয়ে খেতে পাবেন।



রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণ করে

মিছরি খেলে তা রক্তস্বল্পতার মতো অসুখ সারাতে কাজ করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মিছরি রাখুন। মিষ্টি স্বাদের এই উপকারী খাবার আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করে। সেইসঙ্গে এটি উন্নত করে রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়াকেও। তাই রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত মিছরি খেতে পারেন।

শক্তি বৃদ্ধি করে

মিছরি হলো চিনির অপরিশোধিত রূপ সেকথা তো জেনেছেনই। তাই চিনিতে প্রচুর সুক্রোজ পাওয়া যায়, যা থাকে মিছরিতেও। এটি আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই দুর্বল বোধ করলে সঙ্গেসঙ্গে মিছরি কিংবা মিছরি ভেজানো পানি খেতে পারেন। যারা শরীরচর্চা করেন তারাও নিয়মিত মিছরি খেতে পারেন।

সর্দি-কাশি সারায়

মুখে মিছরি ও এলাচ রেখে দিলে তা সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। আবার মিছরি, এলাচ ও বাদম দিয়ে এক ধরনের খাবারও হয়। এটি বাড়িতে তৈরি করে রাখলে তা পরবর্তীতে সর্দি-কাশি হলে কাজে লাগবে। সেজন্য সমপরিমাণ মিছরি ও বাদাম পিষে তার মধ্যে পরিমাণমতো পানি দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। তার মধ্যে দিয়ে দিতে হবে এলাচ। ভালোভাবে গলে গেলে এবং ‍মিশ্রণটি ফুটে উঠলে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপর ঢাকনাযুক্ত পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। সর্দি-কাশি দেখা দিলে এটি খেলে উপকার মিলবে।






মিছরির অপকারিতা

মিছরি নিয়মিত খাওয়া ভালো তবে অন্যান্য খাবারের মতোই এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। জেনে নিন অতিরিক্ত মিছরি খেলে কী সমস্যা হতে পারে-
 
* হজম ভালো করার জন্য মিছরি খাওয়া হয়। কিন্তু এটি অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা তৈরি হতে পারে।

* মিছরি কিছুটা শীতল ধরনের। তাই এটি অতিরিক্ত খেলে অনেক সময় ঠান্ডা লাগা বা সর্দির সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

* আপনি যদি নিয়মিত কোনো ওষুধ খেয়ে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে মিছরি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ মিছরি ওষুধের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

"Palm Candy (Talmisri) is a very popular and tasty food in Bangladesh. It is also called natural sugar. It is made from sweet which is called “NEERA” from palmyra. It is a very good source of Vitamin (B1, B2, B3, B6, B12). It helps to reduce cure PCOS problems in women.
Palm Candy has been used for a long time. Whether it is various types of Ayurvedic medicine, common cold, cough, sugar candy or palm candy are equally present in the houses of Bengal even today. For those who are aware of the bad aspects of eating sugar, pressure, or sugar when they hear about palm candy, let us know, there is a difference between the current sugar and candy in the market. As a result, the quality of candy is immense.

Some ways to use Talmisri:
Lots of people use it as like snack.
It is used replacing of white sugar.
Help to reduce the body weight.

Why Khaas Food?
Ensured quality for the perfect taste
Produced in Clean and Fresh area
No risk of lower quality product
No harmful chemicals or additives used

Benefits of Palm Candy (Talmisri):
Palmieri is an excellent source of vitamins, minerals, and high-quality protein.
Palm Candy is a lump of unrefined sugar.
Instant Remedy For Sore Throat
It help’s to grow your muscle building.
It is very good for diabetic patients.
Good for digestion.

মিছরি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের ঠাকুরের প্রসাদ এর মধ্যে অন্যতম একটি বিশেষ ধরণের প্রসাদ হলো মিছরি (Mishri)। এটি মূলত খুবই ছোট আকৃতির দেখতে হয়। এছাড়াও মিছরি বড় আকৃতিরও দেখতে হয়। অনেক সময় ভেঙ্গে এগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

এছাড়া রান্নার কাজেও চিনির পরিবর্তে মিছরি ব্যবহার করা হয়। এটি এমন এক খাদ্য উপাদান, যা মুখে দিলে সাথে সাথেই এক ধরণের মিষ্টি স্বাদ অনুভূত হয়। যে কারণে মিছরি (misri) ছোট থেকে বড় সকলেরই পছন্দের খাদ্য। 

তবে মিছরির বহু স্বাস্থ্য গুনাগুন আছে, যা বহু রোগের ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আদিযুগ থেকেই আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে মিছরিকে ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে আসতেছে। 

আজকের আমরা মিছরির বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং মিছরি খাওয়ার বিভিন্ন উপায় গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আসুন জেনে নিন, আমাদের হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য, সুস্বাদু খাদ্য মিছরির গুনাগুন গুলি সম্পর্কে।

মিছরি সম্পর্কে আজ যা যা জানব:

  •  মিছরি কি?
  •  মিছরির উপকারিতা
  •  মিছরির পুষ্টি মূল্য
  •  মিছরি কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
  •  কখন খাবেন?
  •  মিছরি কত পরিমান খাবেন?
  •  মিছরির অপকারিতা

মিছরি কি?

চিনির অপরিশোধিত রূপকেই মিছরি বলে। এটি মূলত আখ আর খেজুরের রস থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে। প্রথমে ভারতে এর উৎপাদন শুরু হয়। পরে সারা পৃথিবীতে এখন এটি ব্যবহৃত হতে থাকে। 

চিনির তুলনায় মিষ্টি কম থাকে মিছরির মধ্যে। অথচ খেতেও অনেক সুস্বাদু।  ইংরেজিতে একে 'রক সুগার' নামে চিহ্নিত করা হয়। এগুলি সাধারণত বিভিন্ন রূপ এবং আকৃতির হয়ে থাকে। মিছরি দেখতে সাদা রঙের হয়, তবে এটিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন রং ব্যবহার করা হয়ে থাকে।


মিছরির খাওয়ার বিস্ময়কর উপকারিতা :

মিষ্টি খাদ্য উপাদানটি আমাদের বহু ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা করে থাকে। আসুন জেনে নেই, এগুলো আমাদের কি কি কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে –

১) ওজন কমাতে
বর্তমানে ওজন বৃদ্ধি বড় একটি সমস্যা। তবে আপনি যদি এই সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে কোনো চিন্তা করতে হবে না। এক্ষেত্রে চিনি ব্যবহারের পরিবর্তে মিছরি ব্যবহার করতে পারেন। 

মৌরি সাথে মিছরি মিশিয়ে গুঁড়ো করে যদি রেখে দেওয়া যায় এবং দৈনিক এগুলি যদি সেবন করা যায় তাহলে তা শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারে। এছাড়াও আপনি চাইলে মিছরি পুরোপুরি ব্যবহার করে ওজন কমাতে, সেক্ষেত্রে রান্নায় ব্যবহার করতে থাকুন। 

কেননা চিনির তুলনায় মিছরির স্বাস্থ্য উপকারিতা (misri health benifits) অনেক বেশি। এছাড়া সঙ্গে ধনেগুঁড়ো ব্যবহার করে নিয়মিত যদি গ্রহণ করা যায় এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

২) হজমে সহায়তা করে
হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে চিনির বদলে মিছরির ব্যবহার উপকারী বলে বিবেচিত। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে অনুসারে, মৌরি দিয়ে মিছরি খাওয়ার পরে যদি খাওয়া যায়, তাহলে তা হজমের ব্যবস্থাকে উন্নতি করে। 

এছাড়াও মিছরিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা খাদ্য হজমে সাহায্য করতে পারে। এই কারণে আমরা বলতে পারি, হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়ার পর মৌরি এবং মিছরি একসাথে গ্রহণ করুন।

৩) রক্তাল্পতা নিয়ন্ত্রণে আনতে
রক্তাল্পতার মতো গুরুতর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মিছরি (mishri)। মিছরি প্রত্যাহিক খাদ্য তালিকায় রাখুন। এটি শরীরের হিমো-গ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়াকে বেশি উন্নত করে। 

অনেক ক্ষেত্রেই আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরির ক্ষেত্রে ও রক্তাল্পতার চিকিৎসায় মিছরি ব্যবহার করা হয়। এই কারণে রক্তাল্পতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য খাদ্য তালিকায় মিছরির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৪) শক্তি বৃদ্ধিতে
ইতিমধ্যে জেনেছি, মিছরি হলো চিনির অপরিশোধিত রূপ। যে কারণে চিনিতে প্রচুর সুক্রোজ পাওয়া যায়, যা মিছরি মধ্যে পাওয়া যায়। এটি শরীরের তাৎক্ষণিক শক্তি উৎপাদনে কাজ করে। 

এ কারণে বলতে পারি যে, মিছরি ব্যবহার করার ফলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায় তা প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে, যারা ব্যায়াম করে অনেক সময় ব্যায়াম করার পরে মিছরি ভেজানো জল খেয়ে থাকেন।

৫) সর্দি-কাশি নিরাময়ে
মুখের মধ্যে মিছরি আর এলাচ দিয়ে রাখলে এটি সর্দি-কাশি কম রাখে এবং ঠান্ডা লাগা ও সর্দি থেকে পুরোপুরি মুক্তি দিতে পারে। এলাচ, মিছরি এবং বাদাম দিয়ে এক ধরণের খাদ্য উপাদান তৈরি হয়। এটি যদি আপনি বাড়িতে প্রস্তুত করে রাখেন, তাহলে সর্দি-কাশি থেকে নিরাময় দেবে। 

এজন্য আপনাকে মিছরি আর বাদাম সমপরিমাণ এ পিষে নিয়ে, তার মধ্যে ১ কাপ জল দিয়ে মিশ্রণটি প্রস্তুত করতে লাগবে। মনে রাখবেন, যতক্ষণ না এটি জলের মধ্যে সম্পূর্ণ দ্রবীভূত হচ্ছে, ততক্ষণ এটিকে নাড়িয়ে যেতে হবে এবং এরপরে এলাচ দিয়ে তৈরি করতে হবে। 

মিশ্রণটি তৈরি করে পাত্রের মধ্যে ঢেকে রেখে দিন। ২–৩ দিন এটি রেখে দেওয়া যায়। তারপর এটি একটি শক্ত লজেন্সের মত উপাদানে পরিণত হবে। যা সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিলে এটি খাওয়ার ফলে সর্দি-কাশি থেকে পুরোপুরি নিরাময় পাবেন।

৬) মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষায়
মিছরির মধ্যে থাকা উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, মিছরির মধ্যে থাকা উপাদানগুলি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। 

যে কারণে মনে করা যায় যে, নিয়মিত রাতে গরম দুধের সাথে মিছরি মিশিয়ে যদি পান করা যায়, এটি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয় এবং স্মৃতিশক্তিকে আরও মজবুত করতে সাহায্য করে।

৭) ডায়েরিয়া থেকে মুক্তি
ডায়েরিয়া সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ১০০ মিলি লিটার মিছরি, ১০ গ্রাম ধনেগুঁড়ো, ১০০ মিলি লিটার জলে মিশিয়ে নিয়ে নিয়মিত ৩ বার পান করুন। এটি ব্যবহার করার ফলে ডায়েরিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং শরীর খুব বেশি দুর্বল হবে না এবং এটি পেট ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুন:

• ডায়রিয়া থেকে মুক্তির উপায় 

• সর্দি-জ্বর সারানোর ঘরোয়া উপায় 

৮) শিশুদের জন্য উপকারী
ইতিমধ্যেই জেনেছি, মিছরি (mishri) মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে বিবেচিত। এটি যেমন মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়, তেমনি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতেও সাহায্য করে। 

এই কারণে উষ্ণ দুধের মধ্যে যদি মিছরি মিশিয়ে শিশুদের এটি দেওয়া যায়, তাহলে শিশুদের স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে এটি ব্যবহার খুবই সীমিত করতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করলে উপকারের পরিবর্তে, শিশুদের শরীরে ক্ষতিকারক হিসেবে প্রমাণিত হবে।

৯) নাক দিয়ে রক্ত পড়া কমাতে
শরীর যদি ভেতর থেকে খুবই শুষ্ক হয়ে যায়, এক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যা সমাধানে মিছরি খুবই উপকারী উপাদান। এটি শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা আর শীতল করতে, তাপের প্রভাব গুলিকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। 

নাক থেকে রক্ত পড়ার সমস্যা যে কেবল গরমকালেই হয় তা নয়, এটি যেকোনো সময় হতে পারে। মূলত দেহের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। তাই যদি নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা দেখা যায়, সেক্ষেত্রে মিছরির জল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এই অভ্যাস আপনাকে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা থেকে পুরোপুরি মুক্তি দেবে।

১০) হিমো-গ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে
ইতিমধ্যে আমরা শুরুর দিকে দেখতে পেয়েছি যে, মিছরি ব্যবহার রক্তাল্পতার সমস্যা থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি দেয়। মূলত আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে মিছরির মধ্যে থাকা রক্তাল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার উপাদানগুলি বলা হয়েছে। 

একইভাবে রক্তাল্পতার সমস্যার পাশাপাশি এটি শরীরে হিমো-গ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই যদি প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাপে এটি গ্রহণ করা যায়, তাহলে এটি রক্তে হিমো-গ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

১১) গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে
আমরা জেনেছি যে, গরম দুধের সঙ্গে মিছরি মিশিয়ে খেলে মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়। 

গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে উদ্বেগ এবং স্ট্রেসের যে সমস্যাগুলি দেখা যায়, এজন্য গর্ভবতী কালীন সময়ে যদি নিয়মিত দুধের সঙ্গে মিছরি মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে এ ধরনের সমস্যা গুলি থেকে তারা মুক্তি পেতে পারে। 

যদিও এক্ষেত্রে কোন রকম গবেষণা নেই। তবে সাধারণত এটি কার্যকরী হয়ে থাকে। তবে একটা জিনিস মনে রাখবেন, গর্ভবতী মহিলারা এটি গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেবেন, কেননা প্রত্যেকের শরীর সমান ধরণের হয় না। তাই আপনার চিকিৎসক আপনার শরীর সম্পর্কে ভালো ধারণা দিতে পারবে।

১২) দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে
মিছরির অন্যতম ব্যবহার হলো চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়। এটি নিয়মিত সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে, পাশাপাশি ছানি এবং চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

১৩) গলা ব্যথার সমস্যা দূর করতে
ইতিমধ্যেই জেনেছি, সর্দি-কাশির চিকিৎসায় বাদাম সাথে মিছরি যদি খাওয়া যায়, তা সর্দি-কাশি নিরাময়ে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে গলা ব্যথা হলো সর্দি-কাশির অন্যতম লক্ষণ। তাই বাদাম যুক্ত মিছরির খাদ্যগুলো যদি আপনি খেতে পারেন, এক্ষেত্রে এটি সর্দি-কাশি নিরাময়ের পাশাপাশি গলা ব্যথার উপশম করবে।

১৪) মুখের আলসার নিরাময়ে
মুখের ভেতর হওয়া আলসার বা ঘায়ের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি নিয়মিত মিছরি গ্রহণ করতে পারেন। এজন্য সমপরিমানে মিছরি আর সবুজ এলাচ নিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। এ প্রক্রিয়াটি নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে খুব শীঘ্রই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।

যদিও উপরোক্ত, মিছরির বিভিন্ন শারীরিক সুবিধা গুলি সম্পর্কে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে এখন আরো গবেষণার প্রয়োজন। তাই এটি দৈনিক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে ভুলবেন না।

মিছরির পুষ্টি মূল্য :

মিছরি (mishri) দেখতে ছোট হলেও এটি সু-স্বাদু একটি খাবার। বহু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে সেগুলি সম্পর্কেও আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গিয়েছি। এবার জেনে নেওয়া যাক, মিছরির মধ্যে কি কি পুষ্টি উপাদান কত পরিমাণে রয়েছে।

১০০ গ্রাম মিছরির মধ্যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে –

  •  শক্তি – ৪০০ কিলো-ক্যালরি
  •  কার্বো-হাইড্রেট – ১০০ গ্রাম
  •  চিনি – ১০০ গ্রাম
  •  প্রোটিন – ০ গ্রাম
  •  ফ্যাট – ০ গ্রাম
  •  ফাইবার – ০ গ্রাম
  •  ক্যালসিয়াম – ০ মিলিগ্রাম।

মিছরি কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?

মিছরি আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে পারি। সেগুলো হলো –

• খাবার পরে মৌরি আর মিছরি মিশিয়ে একসাথে গ্রহণ করতে পারি।

• রাতে হালকা গরম দুধের সঙ্গে মিছরি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

• রান্নায় যেকোন খাবারে মিষ্টি স্বাদ আনতে মিছরি ব্যবহার করতে পারেন।

কখন খাবেন?

সাধারণত খাওয়ার পরেই মিছরি খাওয়া উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয়।

মিছরি কত পরিমাণ খাবেন?

দিনে ৫–১০ গ্রাম মিছরি খাওয়া যেতে পারে।


মিছরির অপকারিতা :

যেকোন জিনিস অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে তার ক্ষতিকর প্রভাবগুলি শরীরের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে মিছরিও তার কোন ব্যতিক্রম নয়। আসুন জেনে নিই, মিছরির অধিক পরিমাণে ব্যবহারের ফলে কি কি সমস্যা দেখা দিতে পারে –

• যদিও হজম যথাযথভাবে হওয়ার জন্য মিছরি ব্যবহৃত হয়। তবে এটি যদি মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ করা হয়, সেক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোইন-টেস্টাইনাল সমস্যা তৈরি হতে পারে।

• মিছরির মধ্যে ঠান্ডা ভাব রয়েছে। তাই যদি অতিরিক্ত গ্রহণ করা হয়, সেক্ষেত্রে সর্দি লাগা বা ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

• আপনি যদি প্রতিদিন কোনো ওষুধ খান, তবে সেক্ষেত্রে মিছরি গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করবেন। কেননা এটি আপনার ঔষুধের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে।

তাহলে আজকের নিবন্ধ থেকে মিছরির বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং মিছরি কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, কি কিভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। 

এছাড়াও মিছরি খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে এবং কি কি অপকারিতা বা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে সেগুলো জেনে গিয়েছেন। এবার যথাযথ ভাবেই এটি আপনার খাদ্য তালিকায় ব্যবহার করতে পারেন। কেননা মিছরি আয়ুর্বেদিক ঔষধী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

তাই মিছরি কোন কারণে ব্যবহার করছেন জানতে অবশ্যই নিবন্ধটা ভালো করে পড়ে দেখবেন এবং মিছরির কোন কোন সুবিধা গুলো আপনার ভালো লেগেছে সেটি আমাদের জানাতে একেবারে ভুলবেন না। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং আপনি যদি সুবিধা পান সেটা অপরকে জানাতে কখনই  ভুলবেন না।